বাংলাদেশ হতে পারে জাপানের জন্য তথ্য প্রযুক্তিতে দক্ষ কর্মী ও পেশাজীবিদের আকর্ষণীয় উৎস এবং বাংলাদেশকে বিশ্বের বুকে আগামী দিনের তথ্য প্রযুক্তির গন্তব্য হিসাবে প্রতিষ্ঠা করাই আমাদের লক্ষ্য – আজ (১৩ জুলাই ২০১৮) শুক্রবার বিকালে টোকিওর শোখেন কাইকান এ অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে এ কথা বলেন জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের মান্যবর রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা।
তথ্য প্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশের মানব সম্পদ উন্নয়ন বিষয়ক এই সেমিনারের আয়োজন করে বাংলাদেশ দূতাবাস, টোকিও এবং সহযোগিতা করে জাপান এক্সটারনাল ট্রেড অর্গানাইজেশন (জেট্রো), মিতশুবিশি ইউ.এফ.জে, এবং লিঙ্কস্টাফ। সেমিনারে প্রায় ১৫০ টি জাপানি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা জানান আজকের সেমিনার জাপানে বিগত ১৮ মাসে বাংলাদেশের মানব সম্পদ উন্নয়ন বিষয়ক ৭ম আয়োজন এ থেকেই বোঝা যায় বাংলাদেশ এই খাতকে যথেষ্ট গুরুত্ব প্রদান করেছে এবং এবং প্রতিটি সেমিনারে জাপানি প্রতিষ্ঠানের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক উপস্থিতি তাঁদের আগ্রহ প্রদর্শন করে। বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির বিশ্লেষণ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ বিশ্বে ৩২তম বৃহৎ অর্থনীতি এবং আমাদের প্রবৃদ্ধির হার খুবই স্থিতিশীল; আশা করা হচ্ছে এ বছরও ৭% এর বেশি প্রবৃদ্ধি হবে। তিনি আরো বলেন, জাপান বাংলাদেশের ৮ম বৃহৎ রপ্তানী বাজার এবং দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য প্রায় ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের কাছাকাছি। বাংলাদেশে বর্তমানে ২৬০ টি জাপানি প্রতিষ্ঠান ব্যবসা পরিচালনা করছে। দু’দেশের মধ্যে বিরাজমান চমৎকার সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে রাবাব ফাতিমা বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ তথ্য প্রযুক্তি খাতে প্রায় ২ মিলিয়ন কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও ৫ বিলিয়ন ডলারের
রপ্তানী বাজার তৈরী করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে এবং বাংলাদেশে বিনিয়োগের সুন্দর পরিবেশ বিদ্যমান-তাই বাংলাদেশই হবে আগামী দিনের তথ্য প্রযুক্তি খাতের নতুন গন্তব্য।
রাষ্ট্রদূত আরো বলেন বিশ্বের ১৬০ টির বেশি দেশে প্রায় ১ কোটি বাংলাদেশি দক্ষ-অদক্ষ জনশক্তি বিভিন্ন পেশায় কাজ করছেন। গত বছরও প্রায় ১০ লক্ষের বেশি দক্ষ-অদক্ষ জনশক্তি বিভিন্ন দেশে গমন করেন ও তাঁরা সেখানে সুনামের সাথে কাজ করছেন। তিনি আরো উল্লেখ করেন যে সম্প্রতি জাপানে টেকনিক্যাল ইন্টার্ন প্রেরণের নিমিত্ত উভয় দেশের সরকার একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করে এবং এ বিষয়ে ইতোমধ্যে কাজের অগ্রগতি হয়েছে।
এছাড়া বাংলাদেশের উন্নয়ন নিয়ে জেট্রোর অবস্থান তুলে উপস্থাপনা করেন জেট্রোর সিনিয়র ডাইরেক্টর তাকাশি সুজুকি। বাংলাদেশের অর্থনীতির সামগ্রিক চিত্র তুলে ধরে সুজুকি বলেন বাংলাদেশের দক্ষ জনশক্তির প্রাচুর্য রয়েছে যা জাপানের চাহিদা মিটাতে সক্ষম।
বাংলাদেশের অর্থ বাজার ব্যবস্থা ও বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করেন মিতশুবিশি ইউ.এফ.জের ঢাকার প্রধান প্রতিনিধি হিদেকি কোজিমা। কোয়ালকম এর পরিচালক এহেসানুল ইসলাম সেমিনারে বক্তব্য প্রদান করেন।
বাংলাদেশের মানব সম্পদ উন্নয়নের উপর উপস্থাপনা করেন এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন দূতাবাসের কাউন্সেলর (শ্রম) জাকির হোসেন। এছাড়া বাংলাদেশের উন্নয়নের উপর একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
মুহা. শিপলু জামান
দ্বিতীয় সচিব (প্রেস)
প্রেস রিলিজ