কল্পনার আয়রনম্যানের মতোই বাস্তবেও উড়ে দেখালেন রিচার্ড ব্রাউনিং নামের এক ইংরেজ উদ্ভাবক। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, সম্প্রতি কানাডার ভ্যানকুভারে হওয়া টেড সম্মেলনে ‘আয়রন ম্যান’ এর মতো উড়তে সক্ষম স্যুট তিনি প্রদর্শন করেন। অনেক দর্শকের সামনে স্যুট পরা অবস্থায় কিছুক্ষণ উড়েও দেখান রিচার্ড ব্রাউনিং। যুক্তরাজ্যে উড়ুক্কু স্যুটের ভিডিওটি পোস্ট হওয়ার পর অনেকেই বিষয়টিতে আগ্রহ দেখিয়েছেন। যদিও ব্রাউনিং বারবার জানিয়েছেন, স্রেফ মজা করার জন্যই তিনি এমন পোশাক বানিয়েছেন। অবশ্য ইচ্ছে করলেই মূলধারার পরিবহণ হিসেবে এটিকে ব্যবহার করা যাবে বলে তার ধারণা। উড়ুক্কু স্যুট প্রসঙ্গে রিচার্ড ব্রাউনিং বিবিসি’কে বলেন, এই ধরনের কাজের পেছনে তার বাবার ভূমিকা রয়েছে যথেষ্ট। বলতে গেলে তার কাছ থেকেই অনুপ্রেরণা পাওয়া। রিচার্ড জানান, তার অ্যারোনটিকাল প্রকৌশলী বাবাও একজন উদ্ভাবক ছিলেন। অবশ্য ব্রাউনিংয়ের কিশোর বয়সেই বাবা আত্মহত্যা করেন।
বিবিসিকে দেয়া সাক্ষাতকারে ব্রাউনিং বলেন, সবসময়ই নতুন কিছু তৈরি করতে এবং চ্যালেঞ্জ নিতে তিনি পছন্দ করেন। মানুষের ওড়ার চিন্তা তাকে সবসময় আকর্ষণ করত বলেই এমন স্যুট বানিয়েছেন। সারা শরীরে পরিধাণযোগ্য বিশেষভাবে তৈরি স্যুটটিতে ছোট ৬টি জেট ইঞ্জিন রয়েছে। স্যুটটিকে তিনি এমনভাবে তৈরি করেছেন যাতে একটি কাঠামোর সাহায্যে যন্ত্রটি উড়তে পারে। আর স্যুটটির জ্বালানীর খবর পেতে হেলমেটের সামনে একটি ডিসপ্লে রয়েছে। যেখানে জানা যায় স্যুটটি কতক্ষণ চালানো যাবে। গ্রীক কিংবদন্তীর সুদক্ষ কারিগর এবং শিল্পী, ডেডালুসের নামে ব্রাউনিংয়ের ৮ বছর বয়সী ছেলে এই যন্ত্রটির নাম ডেডালুস স্যুট রেখেছে। রিচার্ড ব্রাউনিং’এর দাবি, স্যুটটি কয়েক হাজার ফুট ওপর দিয়ে খুব সহজেই ঘণ্টায় ২শ’ মাইল গতিতে চলতে পারে।
ব্রাউনিং’এর মতে এই যন্ত্র “মোটরবাইকের চেয়েও নিরাপদ”। তবে নিরাপত্তাজনিত কারণে তিনি খুব বেশি উপরে যান না। গতিও কম রাখেন। বর্তমানে স্যুটটি টানা ১০ মিনিট উড়তে সক্ষম। স্যুটটিকে তিনি আরও উন্নত করার চেষ্টা করছেন। রিচার্ডের দাবি, সেটির কাজ শেষ হলে বর্তমান যন্ত্রটিকে সবার “ছেলেখেলা” বলেই মনে হবে। অবশ্য ইউটিউবে তার উড্ডয়নের প্রথম ভিডিওটি পোস্টের পর যুক্তরাজ্যের সামরিক বাহিনীও তার এই প্রকল্পে অর্থ বিনিয়োগে আগ্রহ দেখিয়েছে। যদিও এখনই মূলধারায় প্রকল্পটি চলে যাবে না বলেই মনে করেন রিচার্ড ব্রাউনিং।