ড. সাহিদা খানম, লেখক ও গবেষক
গ্রাজুয়েট ছেলে যখন এমপ্লয়মেন্টে এক্সচেঞ্জের দ্বারে,
নেতা তখন মজলিশে ব্যস্ত কোনো রেডলাইটের বাসরঘরে।
“স্যার প্লিজ আপনি এই এক…শুধু একটা সুযোগ দিন
দেখবেন আমি সব পারি….মেথর পিওন যা বলবেন”…এই বলে গ্রাজুয়েট থমকালো
আজ কিন্তু তাঁর ‘গ্রাজুয়েট অহম’ তাঁকে আটকাতে ভুলে গেল।
শিক্ষার ইজ্জত নিলাম হওয়া যে দেশের আদর্শ,
সেই দেশ তোমার আমার বেকারত্ব’র বে অফ বেঙ্গল।
বেকারত্ব একটি জীবন্ত অভিশাপ। সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। এখন প্রশ্ন এখানে যে, কোনটাকে বেকারত্ব বলি? লেখাপড়া শেষ করে ভবঘুরে হয়ে ঘুরে বেড়ানো, নাকি একজন কর্মক্ষম ব্যক্তি প্রচলিত মজুরিতে কাজ করতে ইচ্ছুক কিন্তু যোগ্যতানুসারে সে কাজ পায় না এমনটাকে বেকারত্ব বলি। আমাদের এই উপমহাদেশে সমস্যা হলো ‘ডিগনিটি অফ লেবার।’ আমরা শিক্ষা ও বিদ্যা সমার্থক মনে করি! কিন্তু বাস্তবে শিক্ষা হলো চরিত্র গঠন ও বিদ্যা হলো কারিগরি। আমরা স্কুল-কলেজে শিক্ষাকে গৌণ রাখি এবং জোর দেই বিদ্যার ওপর। ফলে মন মতো চাকুরি না পেলে অবসাদে ভুগি। আবার অনেক সফল মানুষ যান্ত্রিক হয়ে পড়েন এবং শেষ বেলায় এসে জীবনের লেনদেন হিসাব করেন। এখন আবার ভোগবাদ বর্তমান সমাজকে সম্পূর্ণভাবে করাল গ্রাস করেছে। অর্থনীতিবিদ স্যামুয়েলসন এর ভাষায় ‘ওয়ান্টস আর আনলিমিটেড নেচার ইজ নিগার্ডলি।’ আর একটি কথা সন্তুষ্টি নিজেকেই আনতে হয়। দুঃখবিলাস হয়ে কিন্তু কোনো লাভ নেই। পুস্তকে অনেক কিছুই লেখা থাকে কিন্তু যুগের সাথে মানিয়ে চলাও একটা আর্ট। দুনিয়ার পরিবর্তন ব্যতীত সব অস্থায়ী।
সম্প্রতি বেকারত্বের যন্ত্রণা থেকে বাঁচতে সুইডসাইড নোট লিখে আত্মহত্যা করেছে ২০০৯-’১০ শিক্ষাবর্ষের খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন রিসোর্স টেকনোলজি’র ছাত্র সৈকত রঞ্জন মন্ডল। সৈকত সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার রমজাননগর গ্রামের কৃষ্ণ মন্ডল ও রানী মন্ডলের পুত্র। তিনি সুইডসাইড নোটে লিখে গেছেন, ‘দু’বছর আগে পোস্ট গ্রাজুয়েশন শেষ করলেও চাকুরি না পাওয়ার হতাশা থেকেই আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন।’ তাঁর রুম থেকে বিসিএস প্রস্তুতির বই, কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স পাওয়া যায়। সৈকতের রুম থেকে উদ্ধার হওয়া ডায়রীর একটি পাতায় লেখা রয়েছে-“অনেক স্বপ্ন ছিল চাকুরি করবো, মায়ের মুখে হাসি ফোটাবো। কিন্তু সব এলোমেলো হয়ে গেল। মায়ের শরীর খুব খারাপ। তবুও আমি খুলনা থেকে পড়ার কথা ভাবছি। বাড়িতে যেতে গেলে সবকিছু নিয়ে যেতে হবে। তাছাড়া আর কোনো উপায় নেই। না আছে টিউশনি, যার ওপর নির্ভর করে খুলনাতে চলছিলাম। কোনো চাকুরিতেও ভয় পাচ্ছিলাম। আজ এতো কঠিন অবস্থা তৈরি হয়ে গেল। আমি শুধু বন্ধুদের কে কি করছে সেই দিকে খেয়াল করে চলছি। আমরা এক মেসে চার বন্ধু থাকতাম। এর মধ্যে আমার অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে গেছে। অন্য তিনজন চাকুরি পেয়েছে। আসলে প্রত্যেকটি কাজ করতে করতে সেটা ছেড়ে দিয়ে বিসিএস’র দিকে যাওয়ায় হঠাৎ চাপ বেড়ে গেল। সেজন্য আমি আরো অ্যাবনরমাল বিহেবিয়ার প্রদর্শন করছি। প্রজেক্টের কাজে চাপ থাকায় শরীলটা গড়তে পারিনি। সে জন্য অতিরিক্ত চাপ সহ্য হয়নি।”
তবে, এটাই কী ভবিতব্য? এই আত্মহত্যার জন্য কে দায়ী? একটা চাকুরি পাওয়া সৈকতের নাগরিক অধিকার ছিল কিন্তু রাষ্ট্র কেনো তাঁকে আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দিল? বেকার সমস্যার সমাধান কী সম্ভব নয়? এর থেকে মুক্তির কী কোনো পথ নেই। আজ একুশ শতকে উন্নয়নের জোয়ারে ভাসা বাংলাদেশে এসে কোনো তাজা প্রাণ নিঃপ্রাণ হয়ে যাবে, এটা মেনে নেই কীভাবে? আত্মহত্যা মহাপাপ জেনেও একজন উচ্চ শিক্ষিত মানুষ কখন আত্মহত্যার মতো খারাপ পথ বেছে নেয় সেটা ভেবে দেখেছেন? এরকম অসংখ্য বেকার আত্মহত্যা করে চলেছে যার সঠিক পরিসংখ্যান মিডিয়ার কাছে নেই। যাঁরা আত্মহত্যা করেনি তাঁদের আত্মা মরে গেছে, জীবনের সকল স্বপ্ন বাতাসে উবে গেছে, নি®প্রাণ দেহ নিয়ে তাঁরা পৃথিবীতে বিচরণ করছে। এভাবে চলতে পারে না, বেকার সমস্যার সমাধান অপরিহার্য। এটা নিয়ে সবাইকে ভাবতে হবে………….
হ্যাঁ এটাও সত্য যে, গড়ে ওঠছে প্রচুর কলকারখানা, যেখানে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে। অর্থনীতির দ্রুত বিকাশ ঘটছে। শুধু উঁচুতলা নয়, সমাজের একেবারে প্রান্তিক স্তর পর্যন্ত আর্থিক উন্নয়ন ঘটছে। এতে করে দূর হবে আর্থিক বৈষম্য। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল ঠিক উল্টো চিত্র। বেকারি বৈষম্য কমা তো দূরের কথা আরো বাড়লো। দেখা যাচ্ছে, বর্তমানে শ্রম বাজারে মোট শ্রমশক্তির চাহিদার মধ্যে ৩০% প্রয়োজন সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত এবং ৩৫% প্রয়োজন বিভিন্ন সেক্টরে কারিগরি জ্ঞান সম্পন্ন শিক্ষার্থীর। অথচ মোট শিক্ষার্থীদের ৮৫% গ্রহণ করছে সাধারণ শিক্ষা এবং মাত্র ১৫% গ্রহণ করছে কারিগরি শিক্ষা। আবার, সেই ১৫% এর মধ্যে অনেকের রয়েছে শুধু সনদ নির্ভর কারিগরি শিক্ষা। ফলে চাকুরির বাজারে উচ্চ শিক্ষিতদের বেকারত্বের হার ৪৭%। দেশের মোট বেকার ৪ কোটিরও বেশি। অন্যদিকে, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো বলছে, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা ও একাধিক সংস্থার সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী গত এক দশকে বাংলাদেশে কর্মহীন এবং বেকারত্বের হার নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে সচেতন মহলে। এর মধ্যে শিক্ষিত জনসাধারণের মধ্যে বেকারত্বের হার সবচেয়ে বেশি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্বল্প সম্পদ এবং বিশাল জনগোষ্ঠীর মৌলিক অধিকার অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসার অধিকার প্রতিষ্ঠায় ব্যক্তি ও রাষ্ট্রের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। দেশের জনগোষ্ঠী নিয়ে সুষ্ঠু পরিকল্পনা না থাকায় দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি হচ্ছে না। ফলে, বেকারত্ব সমস্যার সমাধানও হচ্ছে না। এছাড়া রাজনৈতিক অস্থিরতা, অর্থনৈতিক মন্দাসহ নানা কারণে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে না। নতুন করে চাকুরি হারাচ্ছে অনেকে। বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের সূত্র মতে, প্রতি ছয় মাসে শিল্প খাত থেকেই প্রায় ১০ লাখ লোক কাজ হারাচ্ছে। নির্মাণ খাত, কৃষি, পোলট্রি এবং সেবা খাতেও পড়েছে বিরূপ প্রভাব। নতুন কর্মসংস্থানের বিকল্প দেশের বাইরে অভিবাসন কিন্তু সেখানেও চলছে স্থবিরতা। এ সকল কারণে লেখাপড়া শেষ করে শিক্ষিত যুবকদের কর্ম না থাকায় তাঁদের মধ্যে হতাশা কাজ করছে। আর এ হতাশা থেকে তাঁরা বিপথে পা বাড়াচ্ছে।
তিক্ত হলেও সত্য বর্তমানে বেকারত্ব বাংলাদেশের রাজস্ব আয়ের অন্যতম উৎস। বেকারত্ব অভিশাপ নয়, আশির্বাদ! গেল কিছুদিন আগে খাদ্য অধিদপ্তরে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ১,১৬৬টি পদের বিপরীতে আবেদন পড়েছে ১৩,৭৮,০০০টি অর্থাৎ প্রতি পদের জন্য ১,১৮২ জন আবেদন করেছে। এতে সহজেই অনুমেয় দেশের বেকারত্ব কতোটা ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। এ পদের আবেদন ফি ছিল ১১২ টাকা। ক্যালকুলেশন বলছে আবেদন ফি’র মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ের আয় ১৩,৭৮,০০০ী১১২=১৫,৪৩,৩৬,০০০ (১৫ কোটি ৪৩ লাখ ৩৬ হাজার টাকা)। এ তো গেল শুধু খাদ্য অধিদপ্তরের হিসাব। আবার, প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক পদে আবেদন হয়েছে প্রায় ২৪ লাখ। প্রতি পদে আবেদনের খরচ হয়েছে ১৬০ টাকা। তাহলে মোট টাকার পরিমাণ দাড়ায় ৩৮ কোটি ৪০ লাখ। এ হিসাব থেকে আমার মনে হয় বেকারত্ব আমাদের অর্থাৎ বাংলাদেশের বড় সম্পদ কিন্তু এর ভবিষ্যৎ? প্রতি বছর বেকারত্বের হার বেড়েই চলেছে। এখন বাংলাদেশের প্রধান কাজ হওয়া উচিত বেকারত্ব দূর করা। কিন্তু আমরা দেখছি তার বিপরীত চিত্র। রাষ্ট্রের সর্বস্তরে কলুষতা ও ব্যর্থতার পরিামাপটাও ক্রমে স্পষ্ট চেহারা নিচ্ছে। মোড়ল রাজনীতিক, বাচনিক ওজস্বিতায় উদ্ধত গাড়ল বুদ্ধিজীবী-টকবাজ, ধুরন্ধর দুর্নীতিবাজদের খপ্পরে পড়ে আছে দেশটা। সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো জগদ্দল যাঁতার পেষণে মরছে। সমাজ ভাগ হয়ে গেছে বিপরীত প্রান্তে অবস্থিত দুই শ্রেণির ভেতর। একদিকে উচ্চ আয়ের পুঁজিপতি, উচ্চ রাজকর্মচারী, ধনাঢ্য ব্যবসায়ী, বৃহৎ শিল্পের মালিক এবং অন্যদিকে বিপুল বেকার, কর্মহীন মানুষ, মধ্যবিত্ত-নি¤œবিত্ত যাঁরা রাষ্ট্রের সংখ্যাগরিষ্ঠ। আরো আছে ভোগ-লালসার অহংসর্বস্ব ব্যক্তির নৈতিক চরিত্রের স্থলন ও অধঃপতন। আছে দ্বন্দ্ব-প্রতিদ্বন্দ্বিতার বিকৃত রূপ। এ জাতির ভবিষ্যত নিয়ে আমি শঙ্কিত, উদ্বিগ্ন!
যা-ই হোক, মূলত সারা বিশ্বেই বেকারত্ব মূল সমস্যা। কর্ম ক্ষমতা আছে কিন্তু কাজের সুযোগ নেই। এই সমস্যা তৃতীয় বিশ্বে প্রকট। বিশেষ করে বাংলাদেশে মধ্যবিত্ত ও নি¤œ-মধ্যবিত্ত পরিবারের সংখ্যা বেশি। এদেশের প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নি¤œবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির সন্তানরাই বেশি পড়াশোনা করে। এসব পরিবারের প্রধান অভিশাপ বেকারত্ব, দ্বিতীয় অভিশাপ হলো মধ্যবিত্ত হওয়া। যে সকল মানুষ এই দুই স্থানে লেপ্টে আছে, তাঁদের জীবনটাই অপরিপূর্ণতায় ভরা। এসব পরিবারের সন্তানেরা আর্থিক অসচ্ছলতাকে মেনে নিয়ে দারিদ্রক্লিষ্ট জীবনযাপন করে শিক্ষাজীবন চালিয়ে নিচ্ছেন। লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য একটাই, শিক্ষা জীবন শেষে কিছু উচ্চ ডিগ্রি নিয়ে ভালো মানের একটি চাকুরি পাওয়া। অনেকে আবার পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ না পেয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে। এই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়ার খরচ জোগাতে নি¤œ ও মধ্যবিত্ত পরিবারকে হাঁসফাঁস করতে হয়। মাসে মাসে টানতে হয় সেমিস্টার প্রতি বিশাল অঙ্কের ক্রেডিট ফি। তারপর কবে ডিগ্রি হবে, পাসের সার্টিফিকেট চাকুরির বাজারে কতোটা মূল্যায়িত হবে, তাও দুশ্চিন্তার বিষয়। বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীদের সেই মনোবাসনা আদৌ পূরণ হয় কিনা সেটাও ভাবনার বিষয়?
বেকার, বেকারত্ব ও মধ্যবিত্তের মাঝে এক চিরস্থায়ী সম্পর্ক রয়েছে। সবাই শুধু হাসিটাই দেখে, তার গভীরতা বোঝে না। বেকারের কাছে বেকারত্বে বর্ণনা চাইলে প্রথমেই সে দীর্ঘশ্বাস ফেলবে। মধ্যবিত্তের কাছে নিজ অবস্থানের বর্ণনা চাইলে হয়তো সেও দুমড়ে মুচড়ে যাবে। মধ্যবিত্তের স্থান অনেকটা কষাঘাতপূর্ণ, তাঁরা না পারে অতি বড় কিছু করতে না পারে একদম ছোট কিছু করতে। বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে সবচেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে এই মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো। আর সবচেয়ে নির্যাতিত হচ্ছে মধ্যবিত্ত পরিবারের শিক্ষিত বেকার যুবকেরা। বেঁচে থাকাটাই তাঁদের জন্য হৃদয়হীন ও অমানষিক হয়ে ওঠেছে। বেকারদের সমাজের বোঝা মনে করা হচ্ছে। কিন্তু এই শিক্ষিত বেকাররা দেশের বোঝা নয়, মূলত দেশের সম্পদ। সবার মধ্যে এই অনুভূতি জাগিয়ে তোলা সম্ভব হলে দেশের বেকারত্ব বিমোচন একটি সামাজিক আন্দোলনের রূপ নেবে। সমাজ মুক্ত হবে বেকারত্বের অভিশাপ থেকে।
উপরোক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায়, বর্তমানে বেকারত্ব বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান সমস্যা। একজন বেকারের কর্মহীন জীবন অভিশপ্ত ও অন্ধকারময়। একে কর্মের আলোয় আলোকিত করতে হবে। এক্ষেত্রে সৃজনশীল কর্ম প্রচেষ্টা মানুষকে দারিদ্র ও বেকারত্ব উভয় থেকেই মুক্তি দিতে পারে। এছাড়া দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা, অর্থনৈতিক অবকাঠামো উন্নয়ন, বৈদেশিক বিনিয়োগ বৃদ্ধি, দেশীয় বিনিয়োগে উৎসাহ দান, ব্যাপকভাবে শিল্পায়ন, দক্ষ শ্রমশক্তি রপ্তানি, কৃষি ও পোশাক শিল্পের বিকাশ, মূলধন বিনিয়োগে ইসলামী পন্থা প্রয়োগ, নারীদের কর্মসংস্থান ইত্যাদির মাধ্যমে বেকারদের কর্মসংস্থান করতে হবে। সর্বোপরি যুব সমাজের বেকারত্বের অভিশাপ ও অপবাদ ঘোচালে হলে এবং জাতির কাঁধ থেকে বেকারত্বের বিশাল বোঝা নামাতে হলে সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। এক্ষেত্রে এ পথে যাতে রাজনৈতিক বা প্রশাসনিক কোনো বাঁধা প্রতিবন্ধকতা না আসে, সেদিকে অবশ্যই নজর দিতে হবে। এর পাশাপাশি এদেশের চাকুরি দাতাদের বলবো, দিন দিন বেকারত্ব একটি মহামারী আকার ধারণ করছে বাংলাদেশে। বর্তমান সময়ে চাকরি একটি সোনার হরিণে রূপান্তরিত হয়েছে। আর এই সোনার হরিণ কেবল উচ্চবিত্তদের দখলে। তাহলে এ অবস্থায় আপনাদের কী কী করণীয় হতে পারে? বাংলাদেশে বেকার সমস্যা ও সীমাবদ্ধতা যতোটুকু আছে তার চেয়েও বেশি আছে উন্নয়ন ও অগ্রগতির সম্ভাবনা। সুতরাং, ইগো আর হেভি ওয়েট গিরি ছাড়েন, প্রাণ ভরে নিঃশ্বাস নিন, পেট ভরে খান আর জাতির বেকারত্বের মূল কারণ খুঁজে সকল মধ্যবিত্ত ও নি¤œ-মধ্যবিত্ত যুবা-যুবকদের স্বাবলম্বী হবার সুযোগ তৈরি করুন। কেননা, ক্ষুধা বা বেকারত্ব মানুষকে বিপথে চালিত করে……….!