স্পোর্টস ডেস্ক: ডি ভিলিয়ার্সের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) ফাইনালে উঠেছে র্যায়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু। টুর্নামেন্টের প্লে-অফের প্রথম কোয়ালিফায়ার ম্যাচে গুজরাট লায়ন্সকে ৪ উইকেটে হারিয়ে শিরোপা জয়ের আরো কাছে পৌঁছে গেল বিরাট কোহলির দল। তবে এখনো ফাইনালে যাওয়ার পথ খোলা রয়েছে সুরেশ রায়নার গুজরাটের। বুধবার এলিমিনেটর রাউন্ডে লড়াই করা কলকাতা নাইট রাইডার্স ও সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের মধ্যকার বিজয়ী দলটির সঙ্গে শুক্রবার দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে মাঠে নামবে দলটি। ঐ ম্যাচে জয়ী দল আগামী রোববার টুর্নামেন্টের ফাইনালে ব্যাঙ্গালুরুর সঙ্গে লড়বে। ব্যাঙ্গালুরুর এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার আইপিএলের কোয়ালিফায়ার-১ এ ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ১৫৮ রানে অলআউট হয় গুজরাট। জবাবে ১০ বল হাতে রেখে ৬ উইকেট হারিয়ে ভিলিয়ার্স-আব্দুল্লাহর ব্যাটে ভর করে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ব্যাঙ্গালুরু।
গুজরাটের হয়ে ব্যাট হাতে সর্বোচ্চ ৭৩ রান করেন ডোয়াইন স্মিথ। এছাড়া দিনেশ কার্তিক করেন ২৬ রান। ব্যাঙ্গালুরুর হয়ে শেন ওয়াটসন নেন ৪টি উইকেট। আর ২টি করে উইকেট নিয়েছেন ইকবাল আব্দুল্লাহ ও ক্রিস জর্ডান। যে দলটিতে ক্রিস গেইল, বিরাট কোহলি, এবি ডি ভিলিয়ার্স, শেন ওয়াটসনদের মতো তারকা ব্যাটসম্যান রয়েছে তাদের জন্য ১৫৯ রানের টার্গেট কোনো ব্যাপারই না! কিন্তু মঙ্গলবার দলটির ব্যাটিংয়ে দেখা গেল নাজুক অবস্থা। গুজরাটের বোলারদের কাছে এক রকম অসহায় মনে হয়েছে তাদের। স্কোর বোর্ডে ২৯ রান উঠতেই নেই ৫ উইকেট। ঠিক এ সময় দলটির হাল ধরেন এবি ডি ভিলিয়ার্স। শেষ পর্যন্ত তার বিধ্বংসী ব্যাটিংয়েই জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে কোহলি বাহিনী।
ব্যাঙ্গালুরুর উইকেট পতনের শুরুটা হয়েছিল অধিনায়ক বিরাট কোহলিকে দিয়ে। এবারের আইপিএলের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক এদিন রানের খাতা খোলার আগের ফেরেন সাজঘরে। এরপর ক্রিজ গেইল (৯), লোকেস রাহুল (০), শেন ওয়াটসন (১) ও শচীন বেবিও পথ ধরেন প্যাভিলিয়নের। তবে ষষ্ঠ উইকেটে এবি ডি ভিলিয়ার্স-স্টুয়ার্ট বিনি জুটির ব্যাটিং ম্যাচে ফেরার ইঙ্গিত দিচ্ছিলো ব্যাঙ্গালুরুর। কিন্তু ২৫ বলে ৩৯ রান করা এই জুটিকে বিচ্ছিন্ন করেন রবীন্দ্র জাদেজা। ১৫ বলে ২১ রান করা বিনিকে ফেরান এই বাঁহাতি।
কিন্তু এক প্রান্তে আগলে ছিলেন ভিলিয়ার্স। ব্যাঙ্গালুরুর স্বপ্ন বেঁচে ছিল এই ডানহাতির ব্যাটের দিকে। শেষ দিকে দলটির জিততে ৫৪ বলে আরো ৭৮ রান দরকার ছিল। এ সময় সপ্তম উইকেটে ইকবাল আব্দুল্লাহকে নিয়ে গুজরাটের বোলারদের বিপক্ষে একাই প্রতিরোধ করেন এবি। এরইমধ্যে ৩৩ বলে অর্ধ শতকও পূর্ণ করেন এই ডানহাতি। এরপর ভিলিয়ার্সের ব্যাট আরো চড়াও হয় গুজরাটের বোলারদের উপর। শেষ দিকে ব্যাঙ্গালুরুর জিততে ২৪ বলে ৩৩ রানের দরকার ছিল। এ সময় ১৭তম ওভারে প্রভিন কুমারের বলে একাই ১১ রান নেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ইকবাল আব্দুল্লাহর ও ভিলিয়ার্সের ৫২ বলে ৯১ রানের জুটিতে ভর করে ১০ বল হাতে রেখে জয় নিশ্চিত করে দলটি।
ভিলিয়ার্স ৪৭ বলে ৫ চার ও ৫ ছয়ে ৭৯ রানে অপরাজিত ছিলেন। এছাড়া ২৫ বলে ৩ চার ও ১ ছয়ে ৩৩ রানে অপরাজিত থাকেন আব্দুল্লাহ। গুজরাটের হয়ে ৪ ওভারে ১৪ রানে ধাওয়াল কুলকার্নি ৪টি উইকেট নিয়েছেন। এছাড়া জাদেজা নিয়েছেন ২টি উইকেট। এর আগে ব্যাট করতে নেমে দলীয় স্কোর বোর্ডে ৯ রান উঠতেই প্রথম সারির তিন ব্যাটসম্যান ব্রান্ডন ম্যাককালাম (১), অ্যারণ ফিঞ্চ (৪) ও অধিনায়ক সুরেশ রায়নাকে (১) হারিয়ে চাপে পড়ে গুজরাট লায়ন্স। তবে চতুর্থ উইকেটে ডোয়াইন স্মিথকে সঙ্গে নিয়ে ৬১ বলে ৮৫ রানের জুটি গড়ে দলকে ভালো স্কোরের দিকে নেন দিনেশ কার্তিক।
গুজরাটের স্কোর যখন ১৩.৫ ওভারে ৯৪ তখনই জর্ডানের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন কার্তিক (২৬)। তবে অন্য প্রান্তে নিজের স্বভাবসুলভ ব্যাটিং চালিয়ে যান স্মিথ। বলা যায় একাই দলটির দায়িত্ব নিয়ে খেলতে থাকেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই অলরাউন্ডার। শেষ দিকে এই ডানহাতি ৪১ বলে ৫ চার ও ৬ ছক্কায় ৭৩ রানে চাহালের বলে কোহলির হাতে ধরা পড়েন। স্মিথের বিদায়ের পর বলার মতো আর কোনো ব্যাটসম্যান নামের প্রতি সুবিচার করতে না পারলে ইনিংসের শেষ বলে অলআউট হওয়ার আগে ১৫৮ রান করে দলটি।