বিরোধী নেতার কাছে ক্ষমতা ছেড়ে দিতে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে নতুন চাপের মুখে ফেলল যুক্তরাষ্ট্র। দক্ষিণ আমেরিকার দেশটির রাষ্ট্রীয় মালিকানা তেল কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা এনেছে হোয়াইট হাউস।
আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে জানা যায়, এ পদক্ষেপের ফলে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পেট্রোলিওস ডে ভেনেজুয়েলা এসএ’র (পিডিভিএসএ) ৭০০ কোটি ডলারের সম্পত্তি আটকে যেতে পারে। এক বছরে ১১০০ কোটি ডলারের রপ্তানি আয় হারাবে। সোমবার হোয়াইট হাউসে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা জন বোল্টন সাংবাদিকদের এ তথ্য দেন।
এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের গ্রাহকদের কাছে রপ্তানি হওয়া তেলের অর্থ সংগ্রহ করতে পারবে না পিডিভিএসএ। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক সহযোগী সংস্থা সিটগোসহ পিডিভিএসএ’র সব সম্পদ আটকে গেল।
এ ঘটনায় কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে মাদুরো। নিষেধাজ্ঞাকে তিনি ‘অপরাধ’ হিসেবে উল্লেখ করেন। ভেনেজুয়েলার সম্পদ হরণের জন্য অভিযুক্ত করেন যুক্তরাষ্ট্রকে।
তিনি জানান, এ বিষয়ে রাজনৈতিক ও আইনি ব্যবস্থায় যাওয়ার জন্য পিডিভিএসএ’র প্রধানকে নির্দেশনা দিয়েছেন। তারা যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক আদালতের শরণাপন্ন হবেন বলে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে জানান মাদুরো।
ভেনেজুয়েলায় ঘটনায় ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হস্তক্ষেপ না করার আহ্বানও জানান মাদুরো। তাকে ক্ষমতার থেকে সরানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও অন্য দেশগুলো ‘অর্থনৈতিক যুদ্ধে’ নেমেছে বলেও উল্লেখ করেন।
সম্প্রতি মাদুরো সরকারকে অবৈধ ঘোষণা করে বিরোধীদলীয় নেতা হুয়ান গুয়াইদো নিজেকে দেশটির অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ঘোষণা দেন। দুই প্রেসিডেন্টকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রদানেও সৃষ্টি হয় জটিল পরিস্থিতি। একদিকে সেনাসমর্থিত মাদুরোর পাশে রাশিয়া, চীন, তুরস্ক আর গুয়াইদোর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পাশে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের কিছু দেশ।
গুয়াইদোর ঘোষণার পর পরই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অ্যাসেম্বলি বক্তৃতায় এ অন্তর্বর্তী সরকারকে স্বীকৃতি দেন। তিনি বলেন, গুয়াইদো জনগণের পক্ষে সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছে। আইনের শাসন ও স্বাধীনতার দাবিতে মাদুরোর বিরুদ্ধে তার এ অবস্থান।
আল জাজিরা জানায়, ভেনেজুয়েলার আয়ের সবচেয়ে বড় উৎস তেল। যুক্তরাষ্ট্র দেশটির সবচেয়ে বড় ক্রেতা। ভেনেজুয়েলা ৪১ ভাগ তেল যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করে। সিটগো হলো বড় সহযোগী সংস্থা। আর এর সঙ্গে ভেনেজুয়েলার সেনাবাহিনীর সম্পর্ক রয়েছে।