আন্তর্জাতিক ডেস্ক: দ্বিতীয় মেয়াদে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার কোলকাতার রেড রোডে তৃণমূল সরকারের এ শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান পশ্চিমবঙ্গের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় শপথ আয়োজন বলে জানিয়েছে এনডিটিভি। গত সপ্তাহে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনের ঘোষিত ফলাফলে বিপুল জয় পায় তৃণমূল কংগ্রেস। এক সময় কোলকাতার যে রাস্তায় যুদ্ধবিমান নেমেছে সেই রেড রোড মমতার বিশাল বিশাল কাট-আউটে সাজানো হয়েছিল। রাজ্যের সচিবালয় ও হাইকোর্টের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোর সঙ্গে সংযোগ রক্ষাকারী রেড রোড তৃণমূলের বিজয় উৎসব পালনের জন্য নিরাপত্তা চাদরে ঘিরে ফেলা হয়েছিল।
মূখ্যমন্ত্রী মমতার পাশাপাশি রাজ্য তৃণমূল সরকারের ৪১ জন মন্ত্রীও একই মঞ্চে শপথ গ্রহণ করেছেন। ফুল দিয়ে সাজানো বিশাল এক মঞ্চে এই শপথ অনুষ্ঠান হয়। এই অনুষ্ঠান দেখার সুযোগ দিতে ২০ হাজার মানুষকে বিনা নিমন্ত্রণে অনুমতিপত্র ছাড়াই অনুষ্ঠান স্থলে প্রবেশের সুযোগ দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল, উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব এবং বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বিজেপি দলীয় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি ও বিজেপির পশ্চিমবঙ্গ লোকসভা সদস্য ও মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়ও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। বিদেশি অতিথিদের মধ্যে ছিলেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তবগে। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারের পাশাপাশি তার মিত্র লালু যাদব, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল ও উত্তর প্রদেশের সমাজবাদী দলের মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশের মতো অতিথির উপস্থিতিতে মমতার অতিথি তালিকা নিয়ে জল্পনা-কল্পনা ডালপালা মেলতে শুরু করেছে।
পশ্চিমবঙ্গে বিশাল জয় পাওয়ার পরই ভারতের জাতীয় রাজনীতির মঞ্চে ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক জোট গড়ার ইঙ্গিত দিয়েছিল মমতা। তখন তিনি যাদের নাম করেছিলেন মূলত তারাই তার শপথ অনুষ্ঠান আলোকিত করেছেন। অন্য যাদের নাম নিয়েছিলেন তাদের মধ্যে জয়ললিতা, মায়াবতী এবং বিজেপির মিত্র চন্দ্রবাবু নাইডু অন্যতম। এসব আঞ্চলিক শক্তিগুলোকে নিয়ে মমতা ভারতীয় রাজনীতিতে একটি তৃতীয় ফ্রন্ট খোলার চেষ্টা করছেন বলে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি ও কংগ্রেসকে চ্যালেঞ্জ জানাতেই এ ফ্রন্ট খোলার পরিকল্পনা হচ্ছে বলে ধারণা।
“কোনো তৃতীয় ফ্রন্ট, দ্বিতীয় ফ্রন্ট নয়, হলে সব বিবেচনায় এটিই হবে প্রথম ফ্রন্ট,” বলেন তৃণমূল নেতা ডেরেক ও ব্রায়েন। “এনজিও থেকে লোক আসছে না। তারা রাজনৈতিক দল। রাজনৈতিক বাস্তবতা আছে এখানে,” বলেন তিনি। শুক্রবার সকালে করা এক ট্যুইটে মমতা বাংলার জনগণের ‘নতুন শুরুর’ বিষয়ে কথা বলেন এবং তার শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়ার জন্য মন্ত্রীদের ও মুখ্যমন্ত্রীদের ধন্যবাদ জানান।
কংগ্রেস ও বামপন্থিরা মমতার শপথ অনুষ্ঠান বয়কট করে।