Breaking News

রাখাইনে আবার সহিংসতা : ১৩ আরাকান বিদ্রোহী নিহত মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হাতে

আবারো উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্য। সমস্যা জর্জরিত অঞ্চলটিতে শুরু হওয়া নতুন বিদ্রোহ দমনে অভিযান চালাচ্ছে সরকারি সেনারা। এরই মধ্যে সেনাবাহিনী রাখাইন রাজ্যে ১৩ জন বিদ্রোহীকে হত্যা করেছে বলে গতকাল সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র জানিয়েছেন। খবর রয়টার্স।

পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যের স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে লড়াই শুরু করেছে মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। এদিকে গত বছরের ডিসেম্বর থেকে নিরাপত্তা বাহিনী ও আরাকান আর্মির লড়াইয়ের কারণে প্রায় পাঁচ হাজার নাগরিক অঞ্চলটি ছেড়ে পালিয়েছে বলে জাতিসংঘ জানিয়েছে।

২০১৭ সালে রাখাইন রাজ্যের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর ব্যাপক সামরিক অভিযানের পর আরাকান আর্মির বিদ্রোহ অঞ্চলটিতে নতুন করে সহিংসতা বয়ে এনেছে। পাশাপাশি আরাকান আর্মির বিদ্রোহকে বৌদ্ধ-প্রধান দেশটির শান্তি প্রক্রিয়ার জন্য একটি প্রতিবন্ধকতা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

গতকাল মিয়ানমারের রাজধানী নেপিদোয় এক সংবাদ সম্মেলনে সেনাবাহিনীর মুখপাত্র মেজর জেনারেল তুন তুন নিয়েই জানান, ৫ থেকে ১৬ জানুয়ারির মধ্যে অঞ্চলটিতে আটটি সংঘর্ষ ও পাঁচটি স্থলমাইন বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এ সময়ের মধ্যে সেনাবাহিনী ১৩ জন বিদ্রোহীর মরদেহ ও তিনটি অস্ত্র জব্দ করেছে। এছাড়া বিভিন্ন সংঘর্ষে সামরিক বাহিনীর কয়েকজন সেনাও হতাহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে নিহত সেনাদের সংখ্যা প্রকাশ করেননি মেজর জেনারেল। এ পরিসংখ্যানের প্রয়োজন নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এদিকে মন্তব্যের জন্য তাত্ক্ষণিকভাবে আরাকান আর্মিকে পাওয়া যায়নি। তবে মিয়ানমারের বাইরে থেকে গোষ্ঠীটির এক মুখপাত্র এর আগে রয়টার্সকে জানান, সামরিক বাহিনীর উদ্ধার করা মরদেহগুলোর মধ্যে পাঁচটি আরাকান আর্মির যোদ্ধাদের নয়।

৪ জানুয়ারি মিয়ানমারের স্বাধীনতা দিবসে বিদ্রোহীরা চারটি পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা চালালে সহিংসতা নতুন করে শুরু হয়। বিদ্রোহীদের হামলায় ১৩ জন পুলিশ নিহত ও আরো নয়জন আহত হয় বলে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এদিকে মিয়ানমারের বেসামরিক কর্তৃপক্ষ বিদ্রোহীদের দমন করার জন্য সেনাবাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বলে এক সরকারি মুখপাত্র জানিয়েছেন।

এদিকে আরাকান আর্মিদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনার জন্য স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি সরাসরি নির্দেশ দিয়েছেন বলে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে সেনাবাহিনী জানিয়েছে। রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের মতোই আরাকান আর্মিকেও দমন করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন সু চি। উল্লেখ্য, আরাকান আর্মি মূলত রাখাইনের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী জাতিগোষ্ঠী থেকে সদস্য সংগ্রহ করে থাকে।

এর আগে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (এআরএসএ) ২০১৭ সালে সেনাবাহিনীর ওপর হামলা চালালে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করার কথা জানায় মিয়ানমার। তবে জাতিসংঘ ও পশ্চিমা দেশগুলো এ অভিযানকে ‘জাতিগত দমন’ বলে আখ্যা দিয়েছে। যদিও মিয়ানমার সরকার এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।

সংবাদ সম্মেলনে তুন তুন নিয়েই বলেন, ৯ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট ভবনে আলোচনা চলাকালে অং সান সু চি আরাকান আর্মিকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী উল্লেখ করে তাদের নির্মূলের নির্দেশ দেন।

তুন তুন নিয়েই বলেন, আরাকান আর্মিকে দমন না করা হলে রাখাইনে এআরএসএর বিরুদ্ধে সেনা অভিযান প্রশ্নবিদ্ধ হবে। এআরএসএ ভিন্ন ধর্মাবলম্বী বলে তাদের দমন করা হয়েছে এবং আরাকান আর্মি বৌদ্ধ মতাবলম্বী বলে তাদের ছেড়ে দেয়া হচ্ছে, এমন ধারণা জন্মাতে পারে।

About admin

Check Also

১৫ই আগষ্ট আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন জাপানি নভোচারী ফুরুকাওয়া

জাপানের নভোচারী ফুরুকাওয়া সাতোশির দ্রুত হলে ১৫ই আগষ্ট আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে দ্বিতীয় ভ্রমণ নির্ধারণ করা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *