খুলনার পাগমার্ক ট্যুরস এন্ড ট্রাভেলসের আতিথেয়তায় মুগ্ধ বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার এবং তার সফরসঙ্গীরা। তিনি প্রথমবারের মতো সুন্দরবনে এসে আড়াই দিন থাকার অভিজ্ঞতাকে অনন্য বলে অভিহিত করেন। যুক্তরাষ্ট্র সুন্দরবন সুরক্ষায় আরও কাজ করতে চায়। গত ইংরেজি ২৬-২৮ জানুয়ারি মার্কিন রাষ্ট্রদুত মিলার, তার সহধর্মিণী, বাংলাদেশে ইউএসএইড মিশনের পরিচালক ডেরিক ব্রাউন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ওয়াসিউল ইসলাম সহ প্রায় দশ জনের একটি টিম সুন্দরবন ভ্রমণ করেছেন। পাগমার্ক ট্যুরসের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী নজরুল ইসলাম বাচ্চু সুন্দরবন ট্যুরিজম নিয়ে দীর্ঘদিন কাজ করছেন। তাদের ব্যবস্থাপনায় মার্কিন রাষ্ট্রদুত এবং তার সফরসঙ্গীরা অত্যন্ত সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেছেন, ইকো ট্যুরিজম এবং চমৎকার ব্যবস্থাপনায় তারা অত্যন্ত খুশী হয়েছেন। তাদের কাছে মনে হয়েছে, তারা যেন বাড়িতেই অবস্থান করছেন। তার বক্তব্যে তিনি আরও উল্লেখ করেন, সুন্দরবন এবং তার জীববৈচিত্র্য বিশেষ করে রয়েল বেঙ্গল টাইগার সুরক্ষায় সরকার, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসহ অন্যান্য অনেক সংস্থা আন্তরিকতার সাথে কাজ করে চলেছেন। উপকূলীয় এলাকার মানুষও সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য রক্ষার জন্যে কাজ করে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র সরকার সুন্দরবন ও পরিবেশ রক্ষায় খুব আন্তরিক। কারণ ভৌগোলিক কারণে সুন্দরবন বাংলাদেশে হলেও এটি বিশ্ব ঐতিহ্য, তাই সারা বিশ্বের উচিৎ সুন্দরবন রক্ষায় বাংলাদেশ সরকারের সাথে কাজ করা। যুক্তরাষ্ট্র সুন্দরবন সুরক্ষায় আরও কাজ করতে চায়। কারণ এটা বিশ্বের সম্পদ এবং বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের ফলে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা আবারো বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটা বিশ্বের পরবর্তী প্রজন্মের জন্যে আশাব্যাঞ্জক। সুন্দরবনে রয়েল বেঙ্গল টাইগার, ডলফিন, চিত্রা হরিণসহ যে সমস্ত দূর্লভ প্রাণী রয়েছে তাদের সুরক্ষায় সবারই কাজ করা উচিত।
যুক্তরাষ্ট্র সুন্দরবন সুরক্ষাসহ জলবায়ু পরিবর্তনে বর্তমান সরকারের সাথে কাজ করে যাচ্ছে এবং বিভিন্ন প্রকল্পে ফান্ড দিচ্ছে। সুন্দরবন শুধু বাংলাদেশের নয়, বিশ্বের সম্পদ। সফরকালে তিনি বাগেরহাটের মোংলা উপজেলার জয়মনিরঘোলে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক সহায়তায় পরিচালিত কয়েকটি সংগঠনের কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। রাষ্ট্রদূত মিলার স্থানীয় নাগরিক সংস্থা ওয়াইল্ড টিম লিমিটেডের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ ছাড়া তিনি কমিউনিটি স্বেচ্ছাসেবীদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন। তাদের মধ্যে ছিল গ্রামের ‘টাইগার রেসপন্স’ দল, বাঘ দূত, বাঘ স্কাউটস, সহ-ব্যবস্থাপনা সংগঠন এবং কমিউনিটি টহল গ্রুপের সদস্যরা। ইউএসএইডের বাঘ এবং ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্ট ইকোসিস্টেমস অ্যান্ড লাইভলিহুড (সিআরইএল) কর্মসূচির মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে সহযোগিতার ভিত্তিতে স্থানীয় এ সংগঠনগুলোকে সুন্দরবন এবং এর জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে প্রশিক্ষণ দিতে সহায়তা করেছে। মার্কিন রাষ্ট্রদূত মিলার হাড়বাড়িয়ায় বাংলাদেশ বন বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ ছাড়া সুন্দরবনে গবেষণা এবং যৌথ অংশীদারত্ব কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে রাষ্ট্রদূত মিলার ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং বন বিভাগের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন।
শাহ মামুনুর রহমান তুহিন, আহবায়ক গ্লোবাল খুলনা