১৯৯০ সালের ১০ নভেম্বর সকাল থেকে মিছিলে মিছিলে উত্তপ্ত হতে থাকে রাজধানী ঢাকা। স্বৈরাচারী এরশাদের পতনের দাবিতে রাজপথ প্রকম্পিত। অসংখ্য ছাত্র-জনতার সাথে নূর হোসেনও মিছিলের অগ্রভাগে। নগর কাপিয়ে জনতার মিছিল সচিবালয়ের পাশে, জিপিও মোড়ে পৌঁছালে পুলিশের গুলিতে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন নূর হোসেন। নূর হোসেনের বুকে আর পিঠে লেখা ছিলো “স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক।” কবি শামসুর রাহমান নূর হোসেনকে নিয়ে লিখেছেন, ‘ঝাঁক ঝাঁক বন্দুকের সীসা, নূর হোসেনের বুক নয়, বাংলাদেশের হৃদয় ফুটো করে দেয়।’
নূর হোসেনের মৃত্যুর পর বিভিন্ন হাসপাতাল, আঞ্জুমান মফিদুল কোথাও তাঁর লাশ পাওয়া যায় নি। পরে শাহবাগে পুলিশ কন্ট্রোল রুমে ঘুরে জুরাইন কবরস্থানে গিয়ে কবর খোদকদের কাছে জানা যায়, একটি লাশের বুকে-পিঠে লেখা ছিল। কেরোসিন দিয়ে তারা তা তুলে ফেলার চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু ওঠে নি। সেই লেখার জন্যই লাশটিকে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়। বুকে লেপটে যাওয়া বর্ণমালা নিয়ে চিরনিদ্রায় শায়িত হন শহীদ নূর হোসেন। বুকে-পিঠে যার প্রতিবাদের আগুন আর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার চিৎকার। প্রতিবাদী শহীদ নূর হোসেনকে স্মরণ করে প্রতি বছর ১০ নভেম্বর শহীদ নূর হোসেন দিবস পালন করা হয়।