করোনাভাইরাস নিয়ে উদ্বেগে বিশ্ব অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। ধস নেমেছে বিশ্ব পুঁজিবাজারে। নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে স্বর্ণকে বেছে নিচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। এর প্রভাবে গতকাল সোমবার বিশ্ববাজারে সাত বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম এক হাজার ৭০০ ডলারের মাইলফলক ছাড়িয়ে গেছে। খবর: বিজনেস রেকর্ডার।
গতকাল যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ফিউচার মার্কেটে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৬৮৭ ডলার ৮০ সেন্টে। আগের দিনের তুলনায় এ দাম দশমিক ৯ শতাংশ বেশি। একইভাবে স্পট মার্কেটে প্রতি আউন্স স্বর্ণ এক হাজার ৬৮৬ ডলার ২২ সেন্টে স্থির হয়। আগের দিনের তুলনায় এটি দশমিক সাত শতাংশ বেশি। তবে লেনদেনের একপর্যায়ে মূল্যবান এ ধাতুটির দাম হয় এক হাজার ৭০২ ডলার ৫৬ সেন্ট। ২০১২ সালের পর এটিই ধাতুটির সর্বোচ্চ দাম।
গতকাল বিশ্ব পুঁজিবাজারে বিশেষ করে ইউরোপ ও এশিয়ার বাজারে বড় ধস দিয়ে লেনদেন শুরু হয়েছে। নিরাপদ বিনিয়োগ উৎস হিসেবে স্বর্ণের বাজার বিনিয়োগকারীদের মনোযোগ আকর্ষণ করায় বেচাকেনা বেড়ে স্বর্ণের বাজার চাঙা হতে শুরু করেছে বলে জানান খাতসংশ্লিষ্টরা। সাধারণত ডলারের মান যখন দুর্বল হয়ে ওঠে, তখন স্বর্ণসহ নির্ধারিত বিভিন্ন ধাতুতে বিনিয়োগ করায় নিরাপদ বোধ করেন বিনিয়োগকারীরা। ফলে ধাতুটির দাম বাড়ে। আর ডলার শক্ত অবস্থানে থাকলে স্বর্ণের দাম কমে। তাছাড়া রাজনৈতিক বা আর্থিক কোনো অস্থিরতা দেখা দিলেও এ পণ্যটির দর বাড়ে। কারণ এ সময় এ খাতে বিনিয়োগের পরিমাণ বেড়ে যায়। স্বর্ণকে তখন মানুষ নিরাপদ বিনিয়োগ ভাবে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কমোডিটি ব্রোকার ব্লু লাইন ফিউচার্সের প্রধান বাজার কৌশলবিদ ফিলিপ স্ট্রেইবল বলেন, বৈশ্বিক অর্থনীতিতে শ্লথ অবস্থা নেমে আসার আশঙ্কা থেকে বিনিয়োগকারীরা পুঁজিবাজার ও মুদ্রাবাজারে অর্থলগ্নিতে ভরসা পাচ্ছেন না। স্বাভাবিকভাবে তারা স্বর্ণের প্রতি ঝুঁকেছেন। এ পরিস্থিতি মূল্যবান ধাতুটির বাজার পরিস্থিতি চাঙা করে তুলেছে। তিনি আরও বলেন, গতকাল ডলারের দাম কমেছে। তাই স্বর্ণের দামে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা রয়েছে। স্বর্ণের এ বাজার প্রবণতা বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণ করছে। চাহিদায় চাঙ্গা ভাব বজায় থাকলে আগামী দিনগুলোয় মূল্যবান ধাতুটির দাম আরও বেড়ে যেতে পারে।