তিন বছর আগে আগুন ধরিয়ে ও বুলডোজার চালিয়ে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেয়া হয়েছিল মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের একটি গ্রাম। এবার দেশটির সরকারি মানচিত্র থেকেও গ্রামটিকে একেবারে নিশ্চিহ্ন করে দেয়া হলো। রাখাইনের সেই গ্রামের নাম কান কিয়া। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়ার আগে রোহিঙ্গাদের বাস ছিল সেখানে।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, গত বছর মিয়ানমার সরকার দেশটির নতুন যে মানচিত্র তৈরি করেছে, সেখানে কান কিয়া গ্রামের অস্তিত্ব নেই। মানচিত্র থেকে গ্রামটির নাম একেবারে মুছে ফেলা হয়েছে।
কান কিয়ার জায়গায় আজ দাঁড়িয়ে আছে মিয়ানমারের সরকার এবং সামরিক বাহিনীর বেশ কিছু দালান। আছে কাঁটাতারের বেড়ায় ঘেরা এক পুলিশ ঘাঁটি। সকলের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত গুগল আর্থের উপগ্রহ চিত্রেই যা স্পষ্ট লক্ষ্য করা যায়। বার্তা সংস্থা রয়টার্সও প্ল্যানেট ল্যাবস সূত্রে প্রাপ্ত ঐতিহাসিক চিত্রগুলো মিলিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
মিয়ানমারের সর্ব উত্তর-পশ্চিম প্রান্তের গ্রামটিতে এখন বিদেশিদের প্রবেশ নিষিদ্ধ। তাছাড়া, স্থানটি এটি এতোই ছোট যে- গুগুল ম্যাপে এর কোনো নামও নেই।
জাতিসংঘের মানচিত্র প্রস্তুতকারী দল সংস্থাটির শরণার্থী সংস্থা- ইউএনএইচসিআর, ত্রাণ ও মানবিক সহায়তাকারী প্রতিষ্ঠান এবং অন্যান্য সহযোগীদের জন্য ম্যাপ তৈরি করে থাকে। চলতি বছর এমনই একটি মানচিত্র প্রস্তুত করা হয়- মিয়ানমার সরকারের দেওয়া নানা ম্যাপের উপর ভিত্তি করে। সেগুলোতে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া কান কিয়ার কোনো নাম ছিল না। বরং একে দেখানো হয় কাছাকাছি বড় শহর মুয়াংডো’র অংশ হিসেবে।
২০১৭ সালে কান কিয়ার মতো কমপক্ষে ৪০০ রোহিঙ্গা গ্রাম সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দেয় মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। উপগ্রহ চিত্রের ভিত্তিতে এমনটাই জানাচ্ছে নিউইয়র্ক ভিত্তিক মানবাধিকার গোষ্ঠী হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। ইতোমধ্যেই, কয়েক ডজনের বেশি গ্রামের নাম নিজেদের তৈরি আনুষ্ঠানিক মানচিত্র থেকে সরিয়ে ফেলেছে মিয়ানমার।