Breaking News

অসহনীয় বায়ু দূষণ ঢাকায়

রাজধানী ঢাকার বাতাস গতকালও ছিল অস্বাস্থ্যকর। এদিন ঢাকার বাতাসে মানবস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা পিএম ২.৫-এর পরিমাণ ছিল প্রতি ঘনমিটারে ২০০ মাইক্রোগ্রামের বেশি, যা সহনীয় মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি। বাতাসে পিএম ২.৫-এর সহনীয় মাত্রা প্রতি ঘনমিটারে ১০ মাইক্রোগ্রাম। এ অবস্থায় ঢাকার বায়ুদূষণের মাত্রা অসহনীয় পর্যায়ে চলে গেছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন।
বায়ুদূষণ পর্যবেক্ষণকারী আন্তর্জাতিক সংস্থা এয়ার ভিজুয়ালের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল বেলা ১টায় বায়ুমান সূচক (একিউআই) ছিল সর্বোচ্চ ২৬১। আর ওই সময় বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা পিএম ২.৫-এর পরিমাণ ছিল প্রতি ঘনমিটারে ২১১ মাইক্রোগ্রাম। রাত ১১টা নাগাদ এটি কমে দাঁড়ায় ১৮৭-তে। এ সময় বায়ুদূষণকবলিত শহরগুলোর তালিকায় ঢাকার অবস্থান ছিল পঞ্চম।
ঢাকার বায়ু ও শব্দদূষণ নিয়ে গতকাল পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় মন্ত্রী বলেন, ঢাকা সিটিতে বায়ুদূষণের বিভিন্ন কারণ রয়েছে। তার মধ্যে তিনটি কারণ প্রধান। যাতে ঢাকাসহ সারা দেশে বায়ুদূষণের মাত্রা বাড়ছে। সেগুলো হলো ইটভাটা, মোটরযানের কালো ধোঁয়া ও যথেচ্ছ নির্মাণকাজ।
সরকারি-বেসরকারি অবকাঠামো ও বিভিন্ন কাজে সমন্বয় করা প্রয়োজন উল্লেখ করে শাহাব উদ্দিন বলেন, ইউটিলিটি সার্ভিসের কাজের জন্য সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় করতে হবে। এলিভেটেড এক্সপ্রেস-হাইওয়েসহ বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য সঠিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে। শহরের বিভিন্ন স্থানে ভবন নির্মাণের সময় পানি ছিটানো, যন্ত্রপাতি যেখানে সেখানে ফেলে না রাখা ও নির্মাণের ক্ষেত্র নির্ধারিত বেষ্টনীর মধ্যে আছে কিনা, তা দেখতে হবে। আর এ সমস্যা রোধে মূল দায়িত্ব পরিবেশ অধিদপ্তরের।
মন্ত্রী আরো বলেন, ঢাকা সিটি করপোরেশনের অভ্যন্তরে বিভিন্ন নির্মাণসামগ্রী অর্থাৎ মাটি ও বালির একটি অংশ রাস্তায় পড়ে যাচ্ছে, যা পরে বায়ুদূষণ সৃষ্টির জন্য বিশেষভাবে ভূমিকা রাখছে। যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। এসব বর্জ্য ও ময়লা-আবর্জনার ওপর দিয়ে যানবাহন চলাচলের ফলে বায়ুদূষণের সৃষ্টি হচ্ছে।
উন্নয়নকাজ উন্মুক্তভাবে করার ফলে শহরের বাতাসে ধুলোর পরিমাণ বাড়ছে জানিয়ে তিনি বলেন, বড় বড় অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পগুলো অর্থাৎ এলিভেটেড এক্সপ্রেস-হাইওয়ে, মেট্রোরেলসহ অন্যান্য প্রকল্প কার্যকর পরিবেশগত ব্যবস্থাপনা প্রতিপালন, সময়মতো রাস্তাঘাট সংস্কার ও মেরামত এবং বিভিন্ন প্রকল্পে নিয়মিত পানি ছিটানোসহ দূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন।
বায়ুদূষণের কারণে ঢাকা শহরে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে শিশুদের স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস বিঘ্নিত হওয়ার পাশাপাশি শারীরিক নানা জটিলতা দেখা দিচ্ছে। চিকিৎসকরা বলছেন, বাতাসে ভারী ধাতু ও সূক্ষ্ম বস্তুকণা বেড়ে গেলে ক্যান্সার, শ্বাসকষ্ট, স্নায়ুজনিত সমস্যা বেড়ে যায়, বুদ্ধিমত্তা কমে যায়।
বাংলাদেশে বায়ুদূষণের উৎস নিয়ে চলতি বছরের মার্চে একটি গবেষণা প্রকাশ করে পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিশ্বব্যাংক। তাতে দেখা যায়, দেশে বায়ুদূষণের প্রধান তিনটি উৎস হচ্ছে ইটভাটা, যানবাহনের কালো ধোঁয়া ও নির্মাণকাজ। আট বছর ধরে এ তিন উৎস ক্রমেই বাড়ছে।

About admin

Check Also

১৫ই আগষ্ট আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন জাপানি নভোচারী ফুরুকাওয়া

জাপানের নভোচারী ফুরুকাওয়া সাতোশির দ্রুত হলে ১৫ই আগষ্ট আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে দ্বিতীয় ভ্রমণ নির্ধারণ করা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *