Breaking News

শামীমার নাগরিকত্ব বাতিল করছে যুক্তরাজ্য

যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্ব হারাতে যাচ্ছেন জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটে (আইএস) যোগ দিতে সিরিয়ায় পালিয়ে যাওয়া বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শামীমা বেগম।

বিবিসি জানায়, ব্রিটিশ সরকারের এমন সিদ্ধান্তে হতাশ শামীমার পরিবার।

পরিবারের আইনজীবী তাসনিম আকুনজি জানান, সিদ্ধান্ত নিয়ে তারা হতাশ। সব ধরনের আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার বিবেচনা করছেন তারা।

২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে স্কুলপড়ুয়া তিন তরুণী যুক্তরাজ্য থেকে পালিয়ে সিরিয়ায় আইএসের সঙ্গে যোগ দেন। এদের মধ্যে শামীমা বেগম এবং খাদিজা সুলতানা ছিলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত।

তারা পূর্ব লন্ডনের বাংলাদেশি-অধ্যুষিত বেথনাল গ্রিন একাডেমি নামের একটি স্কুলের ছাত্রী ছিলেন। ওই সময় শামীমার বয়স ছিল ১৫ বছর।

গত সপ্তাহে লন্ডনের দৈনিক দি টাইমসের একজন সাংবাদিক সিরিয়ার একটি শরণার্থী শিবিরে শামীমা বেগমের খোঁজ পান। ওই সময় ১৯ বয়সী এই তরুণী অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন।

পরে তিনি একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন এবং যুক্তরাজ্যে ফিরে আসার জন্য ব্রিটিশ সরকারের কাছে আবেদন জানান।

ব্রিটিশ নাগরিকত্ব আইন-১৯৮১ অনুসারে, জনগণের কল্যাণে কোনো ব্যক্তির নাগরিকত্ব বাতিল করতে পারেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তবে এক্ষেত্রে ওই ব্যক্তি রাষ্ট্রহীন হবে না।

শামীমা বলেন, তিনি তার বোনের ব্রিটিশ পাসপোর্ট নিয়ে সিরিয়ায় যান। কিন্তু সেখানে ঢোকার পর সেটি তার কাছ থেকে নিয়ে যাওয়া হয়।

বাংলাদেশি ঐতিহ্যের প্রতি তার শ্রদ্ধা থাকলেও বিবিসির এক প্রশ্নে তিনি বলেন, তার কাছে বাংলাদেশি পাসপোর্ট নেই এবং সেই দেশে কখনোই ছিলেন না।

এদিকে শামীমার পুত্রের ক্ষেত্রে আইনে বলা হচ্ছে, বাবা-মায়ের নাগরিকত্ব বাতিল করার আগে জন্ম নেওয়া শিশু ব্রিটিশ নাগরিক বলেই বিবেচিত হবে।

শামীমার এটি তৃতীয় সন্তান। অপুষ্টি এবং বিনা চিকিৎসায় মারা গেছে তার আগের দুটি সন্তান। সিরিয়ায় পালিয়ে গিয়ে নেদারল্যান্ডস থেকে আসা একজন আইএস যোদ্ধাকে বিয়ে করেছিলেন তিনি।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি বিষয় সুস্পষ্ট করতে চায় যে, সেটি হলো ব্রিটিশ জনগণের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা।

তিনি নির্দিষ্ট কোনো ঘটনা বা ব্যক্তি নিয়ে আলাদাভাবে মন্তব্য করতে রাজি নন। তবে সব ধরনের নথিপত্র ও প্রমাণের ওপর ভিত্তি করে কারো নাগরিকত্ব বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, কোনো ধরনের তাড়াহুড়া করা হবে না।

সন্ত্রাসবাদ আইনের একজন বিশেষজ্ঞ লর্ড ক্যারলিল বলেন, যদি শামীমার মা বাংলাদেশি হন, তাহলে বাংলাদেশের আইন অনুসারে শামীমাও তাই হবেন।

মেট্রোপলিটন পুলিশের সাবেক চিফ সুপার এবং শামীমার পারিবারিক একজন বন্ধু দাল বাবু জানান, স্বরাষ্ট্র দপ্তরের অবিশ্বাস্য এসব আচরণে তারা বিস্মিত।

তিনি বলেন, “শামীমা কখনো বাংলাদেশে ছিলেন না। কিন্তু তার নাগরিকত্ব বাতিল করা একটি অদ্ভুত সিদ্ধান্ত বলে মনে হচ্ছে এবং আমি কোনোভাবেই নিশ্চিত নই যে আইনিভাবে এটি কীভাবে করা সম্ভব।”

এদিকে জানা গেছে, এই সপ্তাহের শুরুতে দ্বৈত নাগরিকত্ব আছে এমন ১০০ জনেরও বেশি মানুষের ব্রিটিশ নাগরিকত্ব বাতিল করেছে যুক্তরাজ্য। তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী গ্রুপের সমর্থনে ভ্রমণের অভিযোগ আছে।

About admin

Check Also

১৫ই আগষ্ট আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন জাপানি নভোচারী ফুরুকাওয়া

জাপানের নভোচারী ফুরুকাওয়া সাতোশির দ্রুত হলে ১৫ই আগষ্ট আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে দ্বিতীয় ভ্রমণ নির্ধারণ করা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *