পরমাণু প্রকল্পবিরোধী প্রতিবাদের মধ্য দিয়ে হারিয়ে যাওয়া স্বজনদের স্মরণ করল জাপানের ফুকুশিমা শহরের বাসিন্দারা। ১০ বছর আগে ২০১১ সালে সুনামি ও ব্যাপক ভূমিকম্পে জাপানের ফুকুশিমা শহরে প্রাণ হারিয়েছিলেন প্রায় ২০ হাজার মানুষ। খবর: রয়টার্স।
২০১১ সালের ১০ মার্চ জাপানের উত্তরপূর্ব উপকূলীয় অঞ্চলে ৯ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল। ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ জাপানের ইতিহাসে এ পর্যন্ত যত ভূমিকম্প হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বিধ্বংসী দুর্যোগ ঘটেছিল হয়েছিল সেদিন। ওই ভূমিকম্পের প্রভাবে সমুদ্রে জলোচ্ছ্বাস দেখা দেয়, বিশাল দানবাকৃতির ঢেউ আছড়ে পড়তে থাকে সমুদ্রের তীরবর্তী ফুকুশিমা শহরে।
ওই শহরের দাইচি এলাকায় তিনটি পারমাণবিক চুল্লি ছিল। ভয়াবহ ভূমিকম্প ও জলোচ্ছ্বাসে চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে গিয়েছিল সেগুলো। ফলে ফুকোশিমার পুরো এলাকায় তেজস্ক্রিয় পদার্থ ছড়িয়ে পড়ে বিপজ্জনক মাত্রায়।
এই পরিস্থিতিতে প্রাকৃতিক দুর্যোগ কেটে যাওয়ার পরপরই ফুকুশিমার অধিবাসীদের পার্শ্ববর্তী ইউয়াকিসহ অন্যান্য শহরে সরিয়ে নিয়েছিল জাপান সরকার। পাশাপাশি ফুকুশিমায় ছড়িয়ে পড়া তেজস্ক্রিয় পদার্থ সহনীয় মাত্রায় নিয়ে আসতে বিভিন্ন পদক্ষেপও নেয়া হয়েছিল।
সম্প্রতি অন্যান্য শহর থেকে ফুকুশিমায় লোকজন ফিরে আসা শুরু করলেও শহরটির সাবেক অনেক বাসিন্দাই জানিয়েছেন, তাদের আর ফিরে আসার কোনো পরিকল্পনা নেই। শহরটিতে তেজস্ক্রিয় পদার্থের উপস্থিতির কারণেই ফিরে আসতে চাইছেন না তারা।
ফুকুশিমায় ওই দুর্যোগের পর যেসব মৃতদেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছিল, তাদের প্রায় প্রত্যেকের সমাধির ওপর স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়েছে। আর যারা ভেসে গিয়েছিলেন সমুদ্রে, তাদের স্মরণে গড়া হয়েছে স্মৃতিসৌধ। বুধবার সেগুলো সাজানো হয়েছিল ফুল, কাগজের তৈরি পাখি ও হলুদ রঙের রুমালে। মৃতদের স্মরণে সারা দেশ থেকে এগুলো পাঠিয়েছেন মানুষ।