সবুজ শ্যামল ধানক্ষেত ও বন-পাহাড়ের কোল ঘেঁষে, জাপানের পশ্চিমাঞ্চলের শিকোকু দ্বীপে অবস্থিত, সবচেয়ে ছোট্ট শহরটির নাম কামিকাতসু। ১০৯.৬৮ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এ শহরে জনসংখ্যা মাত্র ১৩৭৩ জন। প্রতি বর্গকিলোমিটারে জনসংখ্যার ঘনত্ব ১৩ জন। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরেই জিরো ওয়েস্ট প্রসঙ্গে বিশ্ববাসীর আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে আছে জাপানের এই ছোট্ট শহরটি।
প্রচলিত পদ্ধতিতে আবর্জনা পুড়িয়ে, মাটি চাপা দিয়ে কিংবা পানিতে ফেলা এড়িয়ে পুনর্ব্যবহার করার পরিবেশবান্ধব প্রক্রিয়াকে জিরো ওয়েস্ট বলা হয়। ২০০৩ সালের সেপ্টেম্বরে জাপানে প্রথম জিরো ওয়েস্ট কর্মসূচী হাতে নেওয়ার মধ্য দিয়ে কার্যোপযোগী বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে কামিকাতসু।
শহরজুড়ে পথে ঘাটে কোথাও নেই ময়লা ফেলার জায়গা। এমনকি শহরটিতে কোনো ময়লার গাড়িও নেই। তবুও কোথাও চোখে পড়বে না এক টুকরো ময়লা আবর্জনা। কারণ এখানকার বাসিন্দারা নিজেরাই তাদের আবর্জনা পরিষ্কার করে নিয়ে আসেন ওয়েস্ট রিসাইকেলিং সেন্টারে। সেখানে এসব আবর্জনা সুনির্দিষ্টভাবে ৩৪টি ভিন্ন ভিন্ন ভাগে ভাগ করে রিসাইকেলিংয়ে পাঠানো হয়।
রিসাইকেলিং সেন্টারে একজন কর্মী আবর্জনা সাজানোর প্রক্রিয়াটি দেখাশোনা করেন। ঠিকঠাক জায়গায় ঠিকঠাক আবর্জনা যাচ্ছে কিনা, এটা নিশ্চিত করাই তার দায়িত্ব।
কামিকাতসুর রিসাইকেলিং স্টেশনটিকে রি-সাইকেল এক্সচেঞ্জ শপও বলা যায়। শহরের বাসিন্দারা নিয়মিত এখানে এসে তাদের অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দিয়ে যাবার পাশাপাশি, পছন্দসই জিনিসপত্র বিনামূল্যে বাড়িতে নিয়ে যাবার সুযোগও পান।
বিশ্বব্যাপী কামিকাতসুর দেখানো পথ অনুসরণ করে বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে পরিবেশবান্ধব করতে এখন কাজ করছে বেশ কিছু শহর। ২০১৫ সালে স্যান ডিয়েগো তাদের নগর পরিকল্পনায় জিরো ওয়েস্ট সিটি হবার লক্ষ্যে, ২০৩০ সালের মধ্যে ৭৫ ভাগ ও ২০৪০ সালের মধ্যে শতভাগ সাফল্য অর্জন করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। একইভাবে নিউ ইয়র্কও আগামী ১৫ বছরের মধ্যে এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে।