চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী সর্বোচ্চ সংকোচনের মধ্য দিয়ে গেছে জাপানের অর্থনীতি। নভেল করোনাভাইরাস মহামারী যে ধারণার চেয়েও বড় ধাক্কা দিয়েছে, এ তথ্যে তা উঠে এসেছে। বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিটি যখন নতুন প্রধানমন্ত্রী বাছাইয়ে হিমশিম খাচ্ছে, তখন অর্থনীতির এ বেহাল দেশটির রাজনীতিবিদদের কাছে কঠিন চ্যালেঞ্জ হিসেবে হাজির হবে। খবর রয়টার্স।
অন্যান্য উপাত্তেও বেহাল চিত্র ফুটে উঠেছে। মে মাসে লকডাউন প্রত্যাহার হলেও সার্বিক ভোগে যে মহামারী প্রভাব রাখছে, তা জুলাইয়ের খানা ব্যয় ও মজুরিতে পতনে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
মিত্সুবিশি ইউএফজে মরগান স্ট্যানলি সিকিউরিটিজের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ হিরোশি মিয়াজাকি বলেন, আগামী দিনগুলোয় মূলধন ব্যয় বাড়বে বলে আশা করা যাচ্ছে না। সামনের দিনগুলো কেমন হবে—এ অনিশ্চয়তার মধ্যে কোম্পানিগুলো তাদের ব্যয় বাড়াবে না।
মঙ্গলবারের উপাত্ত নতুন প্রধানমন্ত্রীর সামনে বড় চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসবে। আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর ক্ষমতাসীন দল থেকে নতুন প্রধানমন্ত্রী বাছাই হবে। অর্থনীতি চাঙ্গায় নতুন প্রধানমন্ত্রীকে বিস্তৃত অর্থনৈতিক সহায়তা প্যাকেজ গ্রহণ করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে থাকা চিফ ক্যাবিনেট সেক্রেটারি ইওশিহিদে সুগা এরই মধ্যে ইঙ্গিত দিয়েছেন, যদি নির্বাচিত হন তাহলে সরকারি ব্যয় বাড়াবেন।
সাম্প্রতিক সময়ে জাপানে নতুন করে কভিড-১৯ সংক্রমণ বেড়েছে। তবে পশ্চিমা দেশগুলোয় যেমন প্রাণহানি হয়েছে, সে রকমটা দেখা যাচ্ছে না। সোমবার নাগাদ জাপানে মোট আক্রান্ত দাঁড়িয়েছে ৭২ হাজার ৩২১ জন। এতে মারা গেছে ১ হাজার ৩৮০ জন। পুরো বিশ্বে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৭ কোটি ৭০ লাখের বেশি এবং মারা গেছে ৮ লাখ ৮৮ হাজারেরও বেশি।
গত আগস্টে পরিচালিত রয়টার্সের একটি জরিপে বলা হয়, আগামী মার্চে শেষ হওয়া চলতি অর্থবছরে জাপানের অর্থনীতি ৫ দশমিক ৬ শতাংশ সংকুচিত হবে। পরবর্তী অর্থবছরে মাত্র ৩ দশমিক ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধিরও পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। গত জুলাইয়ে বিওজে সেখানে চলতি অর্থবছরে ৪ দশমিক ৭ শতাংশ সংকোচন ও পরবর্তী অর্থবছরে ৩ দশমিক ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছিল।
চলতি অর্থবছরে দুবার মুদ্রানীতি পরিবর্তন করেছে জাপানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকটি। সেগুলো নগদ অর্থ সংকটে ভোগা ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠানগুলোকে ঋণ সুবিধা দেয়া এবং দুটি বৃহৎ সরকারি প্রণোদনা প্যাকেজে সহায়তা করা।