জাপানি খাবার সুসির নাম এখন প্রায় সারা বিশ্বেই ছড়িয়ে পড়েছে। যারা সুসি সম্পর্কে জানেন তারা ওয়াসাবিকেও চেনেন। সুসি তৈরির সময় ওয়াসাবির ব্যবহার করা হয়। কিন্তু সব সুসিতে ব্যবহৃত ওয়াসাবি যে শতভাগ প্রাকৃতিক এ নিশ্চয়তা দেওয়া যায় না। জাপানের স্থানীয়রা ওয়াসাবিকে বলেন ‘সবুজ স্বর্ণ’। বাজারে যেসব ওয়াসাবি পাওয়া যায় তার অধিকাংশই কৃত্রিমভাবে তৈরি। শেকড়সদৃশ প্রাকৃতিক ওয়াসাবি জন্মাতে অনেকটা সময় লাগে, ফলে এর দামও অনেক চড়া।
জাপানের শিজুয়োকা প্রদেশের ইজু অঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে ওয়াসাবির চাষ হচ্ছে অনেক দিন ধরেই। তবে ওই অঞ্চলে উৎপাদিত সব ওয়াসাবিই চলে যায় পাইকারদের কাছে। ৬২ বছর বয়সী চাষি ইয়োশিরো শিহোয়া এএফপিকে বলেন, ‘ওয়াসাবি উৎপাদনের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে উপাদানটি দরকার, তা হলো স্বচ্ছ পানির প্রাচুর্যতা। পানির তাপমাত্রা যেন সারা বছরই ১০ থেকে ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকে তা সর্বদা নিশ্চিত করতে হবে।’ শিহোয়ার পরিবার গত সাত প্রজন্ম ধরে ওয়াসাবি চাষের সঙ্গে যুক্ত।
ওয়াসাবি চাষের অন্য নাম ধৈর্য পরীক্ষা। ওয়াসাবির একটি শেকড় পূর্ণবয়স্ক হতে এক বছর থেকে ১৮ মাস সময় লেগে যেতে পারে। আর এ জিনিস পূর্ণবয়স্ক না হলে যেমন দাম পাওয়া যায় না, তেমনি খেতে স্বাদও হয় না। ইজুর কৃষি কর্মকর্তা ইয়াসুয়াকি কোহারি বলেন, ‘পাহাড় থেকে পানি নিচের দিকে প্রবাহিত হয়। এ প্রবাহের মধ্যেই কাঠের ফ্রেমে বালু দিয়ে চাষ করা হয় ওয়াসাবি।’
পূর্ণবয়স্ক ওয়াসাবি চেনা যায় এর সবুজ পাতা দেখে। এর চাষ পদ্ধতি এতটাই প্রাকৃতিক যে, পুরো প্রক্রিয়াটি হাতে করতে হয়। গত বছর জাপানে ৫৫০ টন ওয়াসাবি উৎপাদিত হয়েছে। এ পরিমাণ ওয়াসাবির অর্ধেকই উৎপাদিত হয়েছে শিজুয়োকা প্রদেশে।
টোকিও এবং ওসাকার মতো শহরগুলোর বড় সব রেস্টুরেন্টে চড়ামূল্যে বিক্রি হয় প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত ওয়াসাবি। আর অন্য রেস্টুরেন্টগুলোতে যে ওয়াসাবি পাওয়া যায় তার অধিকাংশই কৃত্রিমভাবে তৈরি।