বিশ্বের সবচেয়ে খরাপ্রবণ এলাকা দক্ষিণ আফ্রিকা। দেশটির নয়টির মধ্যে আটটি প্রদেশ খরাজনিত প্রাকৃতিক দুর্যোগে রয়েছে। এসব এলাকার প্রায় হাজার খানেক সম্প্রদায়ের দশ লক্ষাধিক মানুষ পানি স্বল্পতার সম্মুখীন। তবে তাদের জন্য সুখবর নিয়ে এসেছে ১৬ বছর বয়সী স্কুল শিক্ষার্থী কিয়ারা নিরঘিন। দেশটির কৃষি বিভাগ সরকারের কাছে এক বিলিয়ন ডলার ভর্তুকি দাবি করেছে বিদ্যমান এ দুর্যোগে কৃষকদের সহায়তা করার জন্য। তবে এতো বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় ছাড়াই অবিশ্বাস্যভাবে এ সমস্যার সমাধান দিয়েছে কিয়ারা।
জোহানেসবার্গের স্কুল শিক্ষার্থী কিয়ারা নিরঘিন সম্প্রতি ‘আর কোনো তৃষ্ণার্ত ফসল নয়’ নামক একটি প্রকল্প উপস্থাপনের মাধ্যমে ‘গুগল সায়েন্স ফেয়ার’র কমিউনিটি ইমপ্যাক্ট’ পুরস্কার জিতেছে। কিয়ারা কমলার খোসা এবং এভাকাডো’র (নাশপাতি জাতীয় ফল বিশেষ) চামড়া ব্যবহার করে এই সমস্যার সমাধান দিয়েছে। এই অতিবুদ্ধিমতি শিক্ষার্থীটি একটি উৎকৃষ্ট বিশোষক পলিমার (এসএপি) তৈরি করেছে। যেটা তার নিজ ওজনের চেয়ে শতগুণ বেশি পানি সংরক্ষণ করতে সক্ষম। সেই সংরক্ষিত পানি থেকে কৃষকরা তাদের শস্য রক্ষা করতে পারবেন খুব সামান্য খরচে। এই পলিমারটির আরেকটি উপকারিতা হচ্ছে এর ধারণক্ষমতা বেশি। আর এটি ব্যবহৃত নষ্ট পণ্য থেকে তৈরী এবং জীবাণুবিয়োজ্য।
‘কিয়ারা একটি আদর্শ পণ্য খুঁজেছিল যেটা সাধারণ কমলার খোসার জন্য ক্ষতিকারক কিছু হবে না। তার গবেষণায় সে এভাকাডো’র সহায়তার পলিমারটাকে মাটিতে সংরক্ষিত পানিতে রাখে’-সিএনএনকে বলেন গুগল সায়েন্সের কর্মসূচি সংগঠক আন্দ্রে চোহান। আবিস্কারক কিয়ারা সিএনএনকে জানায়, সে জাতীয় দুর্যোগ মোকাবেলার জন্য এটা করেছে। আর এটার সঠিক সূত্র বের করতে তাকে অনেকবার চেষ্টা করে বিফল হতে হয়েছে।
‘আমি দেখলাম কমলার খোসার ৬৪ শতাংশ জেলির মতো হয়ে যাচ্ছে। আর আমি এভাকাডো’র চামড়া ব্যবহার করেছিলাম তৈলাক্ততা পাওয়ার জন্য।’ এই তরুণী কমলার খোসা এবং এভাকাডো’র চামড়ার মিশ্রন সুর্যের তাপে রেখে দেয়। যেখানে ওই দুই উপাদান একে অপরের সঙ্গে বিক্রিয়া করে শক্তিশালী বিশোষক পলিমার উৎপাদন করছে।