ডেস্ক রিপোর্ট // মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন বাণিজ্য নীতি ও ইরান পরমাণু চুক্তি থেকে বেরিয়া যাওয়া নিয়ে উত্তেজনার মধ্যে আঞ্চলিক নেতাদের নিয়ে সম্মেলনে বসেছে চীন। শনিবার (৯ জুন) উপকূলীয় শহর কিনদাওতে শুরু হওয়া দুই দিনের এ সম্মেলন যৌথভাবে আয়োজন করেছে চীন ও রাশিয়া।
আট জাতির সাংহাই কো অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও)-এর এ সম্মেলনে ইরান, ভারত, পাকিস্তান ছাড়াও অংশ নিয়েছে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের চার দেশ কাজাখাস্তান, উজবেকিস্তান, কিরগিজস্তান ও তাজিকিস্তানের প্রতিনিধিরা। সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট মামনুন হুসেইন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি। শনিবার সম্মেলনের উদ্বোধনী ঘোষণা করেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। উদ্বোধনী ভাষণে তিনি বলেন, ‘এসসিও সম্প্রসারণের পর এর ভবিষ্যত উন্নয়নের রূপরেখা তৈরি করব। কিনদাও সম্মেলন আমাদের জন্য নতুন সম্ভাবনার কেন্দ্র। সাংহাইয়ের উদ্দীপনাকে কাজে লাগিয়ে আমরা একসঙ্গে স্রোত ভেঙে এগিয়ে যাব আর আমাদের সংগঠনের নতুন দিগন্তের সূচনা করব।’ এসসিও সম্মেলনে মূলত বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও উন্নয়নগত সহায়তার ইস্যুগুলো নিয়ে আলোচনা হবে। বৈঠকে চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রজেক্ট নিয়ে আলোচনা হবে। চীনের প্রস্তাবিত এ রাস্তাটি এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকাসহ বিশ্বের মোট ৬০টি দেশের ওপর দিয়ে যাবে। ২০১৫ সালে তেহরানের সঙ্গে ছয় বিশ্ব শক্তির স্বাক্ষরিত পারমাণবিক চুক্তি থেকে বেরিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে যাওয়ার ঘোষণার পর এসসিও বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওই ঘোষণার পর তেহরানের সঙ্গে ওয়াশিংটনের উত্তেজনা চলছে। ইউরোপীয় দেশগুলো ওই চুক্তি বহাল রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। শনিবার ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি পারমাণবিক চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে যাওয়াকে অবৈধ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি রাশিয়ার সঙ্গে এ বিষয়ে আরও আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেন।
কিনদাও বৈঠকের আগে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে এক পার্শ্ববৈঠকে রুহানি বলেন, পারমাণবিক চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে যাওয়ার ঘোষণা আমাদের দুই দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার দিকে ধাবিত করেছে। পারমাণবিক চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ঘোষণার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইউরোপীয় ইউনিয়ন, মেক্সিকো ও কানাডা থেকে ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। আগামী দুই দিনের মধ্যে শুল্কের আওতা আরও বাড়তে পারে। এ নিয়ে কানাডায় চলতে থাকা জি-৭ বৈঠকেও মতবিরোধ নিরসন হয়নি। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষক এইনার টানজেন আল জাজিরাকে বলেছেন, এসসিও জি-৭-এর বড় প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে কাজ করবে। তিনি বলেন, দুই সম্মেলনের বিষয়ে বলা হয়ে থাকে- এটাই সর্বোচ্চ ভালো সময় আবার একই সঙ্গে সবচেয়ে খারাপ সময়। অনেক মানুষ এ দুই সম্মেলনে বৈশিষ্ট্য ও সারমর্মের পার্থক্যের দিকে তাকিয়ে থাকবে। এছাড়া ভবিষ্যতে তাদের আকার কেমন হবে তাও খুব গুরুত্বপূর্ণ।
তথ্য সূত্র: সংবাদ।